Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ এপ্রিল ২০২৫

এক নজরে

ইতিহাস

 ভূমিকা:

পানি স্বাস্থ্য, জীবন ও সভ্যতার জন্য একান্ত অপরিহার্য। মানব-দেহের ৭০% এরও অধিক পানি। পানি অত্যন্ত মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। পৃথিবীতে চার ভাগের তিন ভাগ পানি থাকা সত্ত্বেও সুপেয় পানির পরিমাণ অত্যন্ত কম। সমগ্র পানির ১ ভাগেরও কম হচ্ছে মানুষের ব্যবহার উপযোগী। রাজশাহী মহানগরীতে বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকদের নিকট সেই জীবন ও সভ্যতা রক্ষাকারী পানি সরবরাহ করার দায়িত্বে নিয়োজিত  রাজশাহী ওয়াসা। ২০১০ সালে ১লা আগস্ট রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন হতে আলাদা হয়ে রাজশাহী ওয়াসা একক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজশাহী ওয়াসা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত নগরবাসীকে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করে যাচ্ছে। এছাড়া শিল্প ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় যথাযথ পানি সরবরাহ করে রাজশাহীকে উত্তর বঙ্গের অন্যতম নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজশাহী ওয়াসা কাজ করে যাচ্ছে।

রাজশাহী শহর বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত বিভাগীয় সদর দপ্তর যা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম শহর এবং দেশের ১2টি সিটি কর্পোরেশনের একটি। রাজশাহী পৌরসভা ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইহা তদানিন্তন অখন্ড ভারতের প্রথম পৌরসভা গুলোর মধ্যে একটি। ১৯৮৭ সালে রাজশাহী পৌরসভা ৪৮.৪৭ বর্গ কি.মি. এলাকা নিয়ে সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে পৌর এলাকা বৃদ্ধি পেয়ে 104 বর্গ কি.মি উন্নীত হয়েছে। এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান তেমন গড়ে না উঠলেও অনেক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রাজশাহী অঞ্চলে ব্যাপক রেশম চাষ পরিলক্ষিত হয় এবং বাংলাদেশের একমাত্র রেশম গবেষণাগারটিও রাজশাহী নগরীতে অবস্থিত বিধায় রাজশাহী শহরকে রেশম ও শিক্ষা নগরী বলা হয় । রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান জনসংখ্যা বস্তি ও ভাসমান জনগোষ্ঠী সহ প্রায় ৯ লক্ষ। এই শহরটির দৈর্ঘ্য ১২ কি.মি. এবং প্রস্থ ৮ কি.মি.।

 

 বিবর্তনের ইতিহাস :

১৯৩৭ সালে তৎকালীন ভারতের কলকাতার পূর্ত মন্ত্রণালয়ের পানি সরবরাহ শাখার উদ্যোগে রাজশাহী পৌরসভার অধিনে প্রথম রাজশাহী শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়। এই সরবরাহ ব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পুঠিয়ার রাণী হেমন্ত কুমারীর সহায়তায় ১৯৩৭ সালে 740 গ্যালন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১০০টি খাড়া জলাধার রাস্তার পাশে স্থাপিত হয় যাহা স্থানীয় ভাবে “ঢোপকল” নামে পরিচিতি পায়। আজও শহরের অনেক জায়গায় এই ঢোপকলগুলো পানি সরবরাহের ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং পৌরবাসীর পানির চাহিদা পূরণ করছে। এই ঢোপকলগুলো কেন্দ্রীয় ভাবে নির্মিত হেতম খাঁ অবস্থিত আয়রন দূরীকরণ শোধনাগারের সাথে যুক্ত ছিল এবং একটি ওভারহেড সার্ভিস জলাধার স্থাপিত ছিল। হেতম খাঁ অবস্থিত এই পানি শোধনাগারটির ক্ষমতা ছিল প্রতিদিন ৭০০ ঘন মিটার । ১৯৬৫ সালে এই পানি শোধনাগারটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয় ।

১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও নেদারল্যান্ড সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার রাজশাহী পানি সরবরাহ মহা পরিকল্পনা নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এই প্রকল্পের অধীনে ৪টি ভূ-গর্ভস্থ পানি শোধনাগার, ৩০টি গভীর নলকূপ, ২৩১.৪৮ কি.মি. পাইপ নেটওয়ার্ক জালের মত 104 বর্গ  কি.মি অঞ্চলে স্থাপন করা হয়। ২০০০ সালে এই ব্যবস্থায় ৭ লক্ষ জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরণের জন্য নকশা করা হয়। বর্তমানে 87.58% জনসংখ্যা পাইপ লাইনের মাধ্যমে তাদের পানির চাহিদা পূরণ করছে। পানি ব্যবস্থাপনার শৃঙ্খলা আনয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন উচু জলাধার নির্মাণ করে। উল্লেখ্য যে ডাচ সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পের সীমাবদ্ধতার কারণে ইহা পৌরবাসীর পানির চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। প্রায় ১০ বছর পরে সিটি কর্পোরেশন স্ব-উদ্দ্যোগে কিছু গভীর নলকূপ ও পাইপ লাইন স্থাপন করে কিন্তু ইহাও ক্রমবর্ধন চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়।

পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশন শাখা ১আগস্ট, ২০১০ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন হতে আলাদা হয়ে যায় এবং রাজশাহী ওয়াসা নামে রাজশাহী পৌর এলাকার পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন একক কতৃপক্ষ হিসাবে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়।

রাজশাহী ওয়াসা ২০১১ সালের ১০ই মার্চ শালবাগানে অবস্থিত পানি শোধনাগার হইতে কার্যক্রম শুরু করে এবং বর্তমানে শালবাগানস্থ নতুন রাজশাহী ওয়াসার প্রধান কার্যালয়টি স্থানান্তরিত করা হয়েছে (বর্তমান অফিস ঠিকান: বাসা নং-২৮৪, সেক্টর নং-০২, হাউজিং এস্টেট, উপশহর, রাজশাহী-৬২০২)। শালবাগানস্থ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সেই স্থানে “রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী ওয়াসার ১০ তলা ভবন নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।